আক্ষরিক
প্রথম পাতা
কবিতা - ১
কবিতা - ২
গল্প
রম্য রচনা
ধারাবাহিক উপন্যাস
প্রবন্ধ
বিবিধ
Privacy Policy
আক্ষরিক
প্রথম পাতা
কবিতা - ১
কবিতা - ২
গল্প
রম্য রচনা
ধারাবাহিক উপন্যাস
প্রবন্ধ
বিবিধ
Privacy Policy
More
  • প্রথম পাতা
  • কবিতা - ১
  • কবিতা - ২
  • গল্প
  • রম্য রচনা
  • ধারাবাহিক উপন্যাস
  • প্রবন্ধ
  • বিবিধ
  • Privacy Policy
  • প্রথম পাতা
  • কবিতা - ১
  • কবিতা - ২
  • গল্প
  • রম্য রচনা
  • ধারাবাহিক উপন্যাস
  • প্রবন্ধ
  • বিবিধ
  • Privacy Policy

ধারাবাহিক উপন্যাস

ঔরস

ঔরস

বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় 

    

(৬) 

- এমন কোনও ব্যাপার আছে যেটাতে তুমি বলতে পারো যে আমার বউয়ের  মতো আর কেউ এটা করতে পারবে না?’ ঝুমা জিজ্ঞেস করেছিল একদিন। 

আমি তৎক্ষণাৎ কিছু খুঁজে না পেয়ে বলেছিলাম , আগে তো বউ হও। তারপর ভেবে বলছি।

ব্যাপারটার মধ্যে যে একটা এড়িয়ে যাওয়া আছে, ঝুমা হয়ত বুঝেছিল । বলেছিল, তুমি বলতে চাইলে না। আসলে আমার তো কোনও গুণই নেই। 

ব্যাপারটা তা নয়। অনেক গুণ ছিল ঝুমার। সবচেয়ে বড় গুণ, ঝুমা নিজেকে বিলীন করে দিতে পারত আমার সুখে, আমার সুবিধেয়। আমি অফিসে বেরোব, আমি ট্যুরে যাচ্ছি , আমার জামাটা দরকার, আমার সোয়েটারটা পাওয়া যাচ্ছে না, আমার মোজাটা কোথায়, সব কিছুতে ঝুমাই ভরসা  হয়ে উঠল। আমি ছোটবেলা থেকেই স্বাবলম্বী তবু ঝুমা আমাকে সেই কমফর্টটা দেওয়ার চেষ্টা করত যে কমফর্ট যুগ যুগ ধরে পুরুষ তার নারীর কাছ থেকে পেয়ে এসেছে। তারপর একসময় নারী বিদ্রোহ করেছে। সে পুরুষের সেবাদাসী হয়ে থাকতে চায়নি জীবনভর।  কেনই বা থাকবে? 

আমি অনেক অফিস পার্টিতে দেখেছি একজনের বউ আর একজনের বউকে বলছে, ‘ সকালে যে মাসি এসে রান্না করে, সে পার ডে হিসেবে দেড়শো টাকা নিয়ে যায় আর আমার সকাল থেকে খাটনির টাকা কে দেবে’? 

আমার কলিগ গৌতমদা বলত, নিজের সংসারে খাটনির জন্য টাকা দিতে হবে? তাহলে সেই মহিলার স্বামী সংসারে ফিরবে কেন? কেন সে অন্য কোথাও চলে যাবে না যেখানে টাকা দিলেই ফুর্তি করা যায়?  

এখন এসব কথা বলতে গেলে ‘অ্যান্টি ফেমিনিস্ট’ বলে দাগিয়ে দেয় এলিটরা কিন্তু মুশকিল হল মুখে যে বিরাট সমানাধিকারে বিশ্বাসী, বাস্তবে সেই লোকটাও চায় কেউ তাকে একটু যত্ন করুক। 

আমাকে অবশ্য এসব দোটানায় পড়তে হয়নি কারণ বিয়ের পর থেকেই আমি অনুভব করতাম যে ঝুমার জগৎ জুড়ে আমিই আছি। বিয়ের দিন সাতেকের মধ্যেই ঝুমা এমন নিজের কন্ট্রোলে নিয়ে নিল সবটা যেন ও এই বাড়িতে সাত জন্ম ধরে আছে। নতুন একটা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলাম । তাও যেটা নেওয়ার ইচ্ছে ছিল ঝুমা নিতে দেয়নি সেটা। ওর ওই এক যুক্তি, খরচ বাড়াবার দরকার নেই। 

আমি ইচ্ছে করে ওর কাছে তর্কে হেরে যেতাম । যে ভালবাসে তার কাছে হারতেও ভাল লাগে তো। 

আমাদের বিয়ের পরপরই মায়ের একটা অ্যাক্সিডেন্ট হল। পড়ে গিয়ে ফিমার বোন ভাঙল। সেই সময়টা দু-তিন মাস ঝুমা যা করল, মায়ের নিজের মেয়ে থাকলেও বোধহয় করত না। কিংবা কে জানে, মা হয়তো নিজের মেয়েকেই ফিরে পেয়েছিল ঝুমার মধ্যে। মাঝেমধ্যে আমি অবাক হয়ে যেতাম । ঝুমা আমাকে ভালবেসেছে, বিয়ে করেছে, কিন্তু আমার মায়ের ওপর ওর এত কনসার্ন কোত্থেকে এল? প্রতিনিয়ত কী অপরিসীম নিষ্ঠায় মা’কে খাওয়াত, স্নান করাত, বেডপ্যান দিত ঝুমা,  ভাবা যায় না। আমি অনেক বললেও আয়া রাখতে দেয়নি আমাকে। বলেছিল ওই টাকাটা জমিয়ে রাখতে , পরে কোথাও বেড়াতে যাওয়া যাবে। 

বেড়াতে আর যাব কী? তখন আমার নিজের বাড়িটাই সবচেয়ে বড় টুরিস্ট স্পট আমার কাছে। যেখানে ঝুমার মত একজন আশ্চর্য মানুষকে আমি প্রতিদিন আবিষ্কার করছি। 

একদিন রাতে শুভাঞ্জনাকে স্বপ্নে দেখলাম। দেখলাম যে শুভাঞ্জনা তর্জনী তুলে খুব শাসাচ্ছে। কিন্তু কেন তা বুঝলাম না। স্বপ্নটা সাইলেন্ট মোডে ছিল। 

ঝুমাকে স্বপ্নটার কথা বলতেই ঝুমা মুচকি হেসে বলল, আমি তো তোমার চাষাভুষো বৌ । আমাকে কি তোমার কোনওদিনই ভাল লেগেছে ? মন রাখতে আদর করো আমি জানি। আসলে ভালবাসো ওই ওদেরই। তাই স্বপ্নে আমি আসি না, ওরা আসে। 

আমি আদরের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিয়ে ঝুমাকে আমার শরীরের সঙ্গে মিশিয়ে নিতে লাগলাম যেভাবে পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে নামতে থাকা একটা ট্রাকের চাকা ঠেলাগুলোকে গুঁড়ো করতে করতে মাটিতে মিশিয়ে দিতে থাকে। মনে হল ঝুমা সেই চাষি যাকে ল্যাবরেটরির বিকারে চোখ রেখে ঘন্টার পর ঘন্টা পরীক্ষা করে বলতে হয় না কোথায় কী ফসল হবে । ঝুমা আমার মনের মাটিটাকে মুঠোয় তুলে নিয়ে বলে দিতে পারে, কোথায় ডাল হবে , কোথায় আলু হবে। ভালবাসার ভিতরে যে ক্ষরণ থাকে তা শুধু শারীরিক নয়, আত্মিকও । ঝুমার আর আমার প্রবল সঙ্গমের মধ্যে কখনও কখনও আমার চোখের জল ঝুমার মুখের ওপর গিয়ে পড়ত। আশ্লেষ আর প্রেম একাকার হয়ে যেত মিলেমিশে।


(ক্রমশ...)

পড়তে থাকুন

পূর্ববর্তী ও পরবর্তী
কবিতার পাতা - ১কবিতার পাতা - ২গল্পরম্য রচনা প্রবন্ধবিবিধ
  • প্রথম পাতা
  • Privacy Policy
  • Terms and Conditions

আক্ষরিক

82748 38787

Copyright © 2025 আক্ষরিক - All Rights Reserved.

Powered by GoDaddy

This website uses cookies.

We use cookies to analyze website traffic and optimize your website experience. By accepting our use of cookies, your data will be aggregated with all other user data.

Accept