
ভেসে যাওয়া এক ডাকনাম...
সৌম্যজিৎ আচার্য
একজন কবি,
একজন লেখক
আর একটা নৌকা
একদিন বুঝতে পারে,
তারা আসলে একজন...
তারা আসলে হাওয়ার বিষন্নতা
সিঁড়ির ধাপে কষ্টের ক্যালিগ্রাফ
কিংবা দূরে দাঁড়িয়ে থাকা
রেলগাড়ি নামের এক গাছ
অথচ, লেখকের ছাদের নাম আলজিব
কবির পোষ্য হোঁচট
নৌকার পালে লেখা, জলছুঁই ডট কম
একজন কবি,
একজন লেখক
আর একটা নৌকা
একদিন বুঝতে পারে,
তারা আসলে একজন
বসে আছে চারযুগ আয়নার ভেতরে...

বৃষ্টির আলপনা
পুলক রায়
চলো যাই শাল-পিয়ালের দেশে
বর্ষামুখর শ্রাবণধারায় ভেসে,
স্মৃতির কোঁচড়ে জীবনের যতো ধন
বাদলধারায় ভিজুক অনুক্ষণ।
নিবিড় বনের নির্জন বীথিকায়
কোনও খেয়ালিয়া মেঘমল্লারে গায়,
আমি শুধু দেখি বৃষ্টির আলপনা
ক্ষণেক মগ্ন ক্ষণেক আনমনা।

পৃথিবীর অসুখ সারেনি
সবর্ণা চট্টোপাধ্যায়
যে পথ এঁকে বেঁকে গেছে শব্দ আর স্তব্ধতার নৈসর্গে,
অসুখে ডুবে থাকা সারিবদ্ধ গাছ–
ভাঙা রাস্তার আর্তনাদ অনাথ শিশুর মতো–
পৃথিবীর কোথাও যুদ্ধ হলে যেভাবে রক্তাক্ত শরীর
জমে স্তূপাকারে,
শবের ওপর হয়তো একা কোনও শিশু–
এমনই মরণফাঁদে হেঁটে চলি এখন!
বয়স বাড়ে তবু বদলায় না– ভালোবাসার বিশ্বাস!
অথচ আমি সর্বস্ব দিয়েছি যাদের,
তারা কেউ সেভাবে চায়নি আমায়!
এও এক অসুখ! অ-সুখী থাকার!
হয়তো সে স্তব্ধতা থেকে অতি সহজেই খুঁজে নিতে
পারি দুফোঁটা শিশির কিংবা একটা আস্ত মেঘ
পাহাড়ের দৃশ্য,
সেখানেও যে লক্ষলক্ষ মরদেহ।
খুব চেনা পোড়া গন্ধ।
সে গন্ধে খিদে মেটে, ক্ষমতার।
কি প্রমাণ করতে চাও– ঈশ্বর নেই?
আমিও নিজেকে ঈশ্বর ভেবেছি—
ভেবেছি, মা হয় উঠেছি তোমার!
ভুল ভাঙল যখন, দেখি গোটা পৃথিবীটাই ধ্বংস
হয়ে গেছে, একেবারে!

মিথ্যে
অমিতাভ সেন
মিথ্যে মনে করে
মৃত্যু কারো...
চোখে তার স্পর্শ
করো মন
ভুল করে মেরো
না শরীর
তার... মৃতের না
কোরো ক্ষয়
জন্ম থেকে মৃত্যু
জেনো মিথ্যে...

স্বরূপ
তপন মুখার্জি
যখন সে এলো, রোদ ভাঙছি আমি নির্জন গোপনে।
আমার হাতে শূন্য থালা, তার হাতভরা বিদ্যুৎ।
সে বলল,' ভালোবাসা ভরিয়ে দেয়, দেখো আমার হাত।'
আমি বললাম,' ভালোবাসা ভাসিয়ে দেয়, দেখো আমার হাত।'
ভরানো আর ভাসানোর তর্কে সময় জমে উঠলো।
একসময় ক্লান্ত হয়ে বসে পড়ি।
দুদিকে মুখ দুজনের।
বুঝলাম, ভালোবাসা আসলে একলা করে দেয়।

সৌর্য্যগন্ধা: এক
সুপ্রভাত মেট্যা
এই ব্যথা দিয়ে প্রিয় অন্ধকার তোমাকে ঢাকি।
তোমার দুঃখরূপ, ক্ষুধাতুর রাত্রির শেষে
বর্ণময় চাঁদের আড়ালে মিশে গেছে।
এই ডুবে যাওয়া চোখ
কী অর্থে এখন বলো আমি জ্যোৎস্নায় রাখি!
ও কী সৌর্য্যগন্ধা? কি বলছ?
ভোরের আগের দেশ
ক্ষরার মাঠ ফলিয়ে আজ কলঙ্ক হয়েছে?
ওকে কি রূপ দেবে তুমি-
রূপোর থালা, চন্দ্রবাটি; নাকি
সোনার কলসমুখে
জমে থাকা তোমার প্রিয় অসুখের
কোনও রূপোলি তরল সুখ?
বল কি আছে লেখার আর
তোমার শরীরে থেকে যাওয়া বাকি?

মৃত্যু
অর্কজিৎ সেন
আমি কী মরব সেইভাবে
যেভাবে একে একে চলে গেল
আমার পিতৃকূল?
সেই একইরকম যন্ত্রণা পেয়ে
অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থেকে থেকে
একদিন হঠাৎ আচমকা ?
যেভাবেই শেষ হই না কেন
থামতে তো আমাকেও হবে।
আমাকেও তো মরতে হবে।
গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে ক্ষয়ে যাচ্ছে পাঁজরের হাড়,
পারলৌকিক কাজের দায়িত্বের বোঝায় ---
শোক পালনের নেই অবসর।
চেয়ে রয়েছে আমার দিকে
একভাবে আমার মাতৃকুলের
শেষ মহাবৃক্ষ।

স্বপ্ন বাঁধে গান
সুখেন্দু ভট্টাচার্য
পথে বসা স্থবিরতা, এই ডোঙা ; কার সাধ চড়ে
আগুন নেভানো শর্ত উচ্চারণে শপথের বাণী
আগুন জ্বালাতে শেখে বেশি। প্রজন্মে, ধ্বংস আগুন।
হয়তো সে পিচরাস্তা খুঁজে চলে আরেক আগুন
মোহিনের ঘোড়াগুলি বেঁচে থাকে মিছিলে গোপন
ষাটের ‘সলিল’, বোধে একুশ শতকে পথ সাথী।

আমি আছি
মলয় সরকার
দ্রোহ থেকে বিদ্রোহে
আমি আছি,
প্রতিবাদের থুতু চেটে
শ্লোগানে মিছিলে আমি আছি,
অসামাজিক দুর্নীতির দুর্গন্ধে টিকে থাকা
সমাজে বুক ফুলিয়ে বলি আমি আছি।
মিথ্যে চিড়ে ভেজানো
নকশা করা বক্তৃতায় বিশ্বাস করা
মানুষের মধ্যে একজন আমি আছি
ফেসবুক ইনস্টায় জাদুর ছোঁয়ায়
কদর্য কাদা ছোড়াছুড়িতে
পাড়ার দোকানের লোকাল রাজনীতিতে
ছুড়ে দেওয়া শব্দে আমি আছি।
ধর্মের আফিম খেয়ে রাম রহিমের
নোংরা রাজনীতির স্বার্থের সিঁড়িতে
পা দিতেও আমি আছি
জলে স্থলে অন্তরীক্ষে
পাপের বোঝা ঘাড়ে নিয়ে
দুহাত ছড়িয়ে বলছি
আমি আছি, আমি আছি, আমি আছি
হতাশ মানুষের ভীড়ে।
দ্রোহ থেকে বিদ্রোহে
আমি আছি,
প্রতিবাদের থুতু চেটে
শ্লোগানে মিছিলে আমি আছি,
অসামাজিক দুর্নীতির দুর্গন্ধে টিকে থাকা
সমাজে বুক ফুলিয়ে বলি আমি আছি।
মিথ্যে চিড়ে ভেজানো
নকশা করা বক্তৃতায় বিশ্বাস করা
মানুষের মধ্যে একজন আমি আছি
ফেসবুক ইনস্টায় জাদুর ছোঁয়ায়
কদর্য কাদা ছোড়াছুড়িতে
পাড়ার দোকানের লোকাল রাজনীতিতে
ছুড়ে দেওয়া শব্দে আমি আছি।
ধর্মের আফিম খেয়ে রাম রহিমের
নোংরা রাজনীতির স্বার্থের সিঁড়িতে
পা দিতেও আমি আছি
জলে স্থলে অন্তরীক্ষে
পাপের বোঝা ঘাড়ে নিয়ে
দুহাত ছড়িয়ে বলছি
আমি আছি, আমি আছি, আমি আছি
হতাশ মানুষের ভীড়ে।

ধাঁধা লেগে আছে আমাদের চোখে
তাপস কুমার দে
আমরা এমন একটা কোণে এসে পৌঁছেছি যেখান থেকে পথ হারিয়ে গেছে
এবং মৃতরাই কেবল সেখান থেকে ফিরে আসতে পারে
ফিসফিসানি শব্দ থেকে আমরা খুন হতে পারি
আমাদের বুকে ইতিহাস আলো ছড়িয়ে শুয়ে আছে
সূর্যাস্তের ছাই দিয়ে অন্ধকারের প্রলেপ মেখে আছি
আর রহস্যের অসংখ্য ছিদ্র দিয়ে সাপ যাতায়াত করছে
অচেনা একটা লেকের শরীর ছুঁয়ে শুয়ে আছে মিছিল
সূর্যের লাশ বহনকারি সকল নক্ষত্ররাই খুনি
একটি অন্ধকারের মধ্যে তাদের জন্ম হয়েছিল
আকাশটা পেছন ফিরে বারবার বৃষ্টিকে ডেকে গেলেও
বৃষ্টি না ফিরে সমুদ্রে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল
চাঁদ শেলাই করা রূপকথা এক অদ্ভুত সুতো
যা দিয়ে আয়না পরা সময়কে গেঁথে রাখা হয়েছে
ক্রোধ থেকে জন্মানো মেঘ আমাদের মাথার ওপরে
যে কেবলই স্বপ্ন দেখায়
তার প্রাপ্তি না-কি শুধুই বৃষ্টি
আমরা রক্তের দীর্ঘ স্রোত দেখতে পাই দীর্ঘশ্বাস নামক অঙ্কনের ভেতরে
জলের ছিদ্রে তাই পরগাছা জন্মেছে
ধাঁধা লেগে আছে আমাদের চোখে
আমরা উপহার পেয়েছি ভাঙা আয়না
আর ঝরা রক্ত থেকে জন্মাচ্ছে নতুন দিগন্ত ।।

শুধু হারার সাহস
ভাগ্যশ্রী রায়
কবে থেকে
চলেছি জিতে!
মাটি আমায় টানেনি কোলে
আকাশ দিয়েছে ছুঁড়ে
ভাসছি তো ভাসছি
জলশূন্য প্রপাত কূলে
শুধু হারার সাহস নেই বলে।

জল ফড়িং
অসীমা দে
জল ফড়িং,
স্বস্তি ও নেই তৃষ্ণা ও মিটে নি কভু উড়ে উড়ে ক্লান্ত শরীর বেয়ে চুঁইয়ে চুঁইয়ে ঝরেছে রক্ত!
এতো রক্ত এতো রক্ত কোথায় ছিল?
জল ফড়িং?
জল ফড়িং?
জীবন টা তার ধু ধু মরু রুখা শুখার হাড় পাঁজরে মুখ লুকিয়ে লজ্জা ঢাকে,
গোড়ায় গলদ!
বাঁধ না মানা মনের কাছে হেরে যাওয়ার দগ্ধ ক্ষত,
বহু দুরের বসত ছেড়ে একলা সেদিন সুখের খোঁজে ডুব দিয়েছিল ভোরের মায়ায়,
স্বপ্ন টাকে সত্যি ভেবে অচেনা শহর অচেনা মানুষ অচেনা রং এর ছোট্ট নীড়ের জল ফড়িং,
সামনে পাহাড় পিছনে নদী পূব কোণেতে সবুজ বন,
তাকিয়ে আকাশ ভাবতো বসে বেশ তো আছে আনন্দে তে আমার এ মন!
বন্ধু স্বজন দিব্যি বাঁচে,
নদীর জলে আপন মনে খিলখিলিয়ে একলা হাঁসে!
হঠাৎ ঝড়ে নিঃস্ব হৃদয়,
শরীর মনের নিত্য ক্ষয়,
অভিমানের পাহাড় সেজে জল ফড়িং টা আঁধার মাখে,
বন্ধু বিহীন স্বজন হারা বহু দুরের আগলে বসত দাঁড়িয়ে থাকে পথের বাঁকে,
জল ফড়িং?
জল ফড়িং?
একলা তুমি?
সব অচেনা?
সব মিথ্যে?
মুখ লুকিয়ে যায় এড়িয়ে নিথর শরীর ফ্যাকাশে মুখ!
যা ভেবেছিল স্বস্তি সুখ!
সবটাই ছিল মনের অসুখ!
দুঃখ গুলো নদীর জলে দেয় ভাসিয়ে,
মিথ্যে গুলো পাহাড় বানায়,
সত্যি টুকু আঁকড়ে বাঁচে পূব দিকের ঐ সবুজ বনে,
জল ফড়িং টা এখনো আছে বেঁচে
বেশ তো আছির অন্য মনে!!!!

অলিখিত সময়
অর্পিতা কুন্ডু
ভালোবাসা যদি বসন্তের কোলে মাথা রাখে...আর শীতের রোদ্দুর মাখে... অমন ভালোবাসা আমার চাই না
যেদিন ঝরা পাতার উপর সুখের দিনগুলো মর্মর ধ্বনি তুলবে...জোয়ারের উদ্দাম স্রোত ভাটার টানে হারিয়ে যাবে.. শরীরের সবকটা বাঁক যেদিন বয়সের ভারে কুঁকড়ে যাবে ..তবুও তুমি থাকবে এক নিঃশর্ত সন্ধ্যায়...
সেই তুমি আর এই আমি ঋতু র মতো পাল্টে যাব
তবু হাত দুটো শুধু ছুঁয়ে থাকবে .... অলিখিত সময়ে।

স্বীকারোক্তি
জয় ভট্টাচার্য্য
তুমি শুধু মেঘ চেয়েছিলে দিতে পারিনি
উষ্ণতা মেঘ ডেকে আনে জানি
প্রচন্ড উত্তুরে হাওয়া ছিল
আর শুধু ছিল
অতল নিস্পন্দ
শীতলতা
ঘণ হিম
উত্তুরে শীতল হাওয়ায়
উড়িয়ে নিয়েছিল সব মেঘ
তোমার ওম নিয়েও পারিনি আমি
পারিনি দিতে উষ্ণতা মেঘ চেয়েছিলে তুমি।

ধাঁধা লেগে আছে আমাদের চোখে
তাপস কুমার দে
আমরা এমন একটা কোণে এসে পৌঁছেছি যেখান থেকে পথ হারিয়ে গেছে
এবং মৃতরাই কেবল সেখান থেকে ফিরে আসতে পারে
ফিসফিসানি শব্দ থেকে আমরা খুন হতে পারি
আমাদের বুকে ইতিহাস আলো ছড়িয়ে শুয়ে আছে
সূর্যাস্তের ছাই দিয়ে অন্ধকারের প্রলেপ মেখে আছি
আর রহস্যের অসংখ্য ছিদ্র দিয়ে সাপ যাতায়াত করছে
অচেনা একটা লেকের শরীর ছুঁয়ে শুয়ে আছে মিছিল
সূর্যের লাশ বহনকারি সকল নক্ষত্ররাই খুনি
একটি অন্ধকারের মধ্যে তাদের জন্ম হয়েছিল
আকাশটা পেছন ফিরে বারবার বৃষ্টিকে ডেকে গেলেও
বৃষ্টি না ফিরে সমুদ্রে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল
চাঁদ শেলাই করা রূপকথা এক অদ্ভুত সুতো
যা দিয়ে আয়না পরা সময়কে গেঁথে রাখা হয়েছে
ক্রোধ থেকে জন্মানো মেঘ আমাদের মাথার ওপরে
যে কেবলই স্বপ্ন দেখায়
তার প্রাপ্তি না-কি শুধুই বৃষ্টি
আমরা রক্তের দীর্ঘ স্রোত দেখতে পাই দীর্ঘশ্বাস নামক অঙ্কনের ভেতরে
জলের ছিদ্রে তাই পরগাছা জন্মেছে
ধাঁধা লেগে আছে আমাদের চোখে
আমরা উপহার পেয়েছি ভাঙা আয়না
আর ঝরা রক্ত থেকে জন্মাচ্ছে নতুন দিগন্ত ।।

মানুষ
কাজল মুখোপাধ্যায়
আমরা তো প্রথমে নিজের সুখে- অসুখে ভরা শরীর,
হাঁটুর ভেতরে জমে থাকা কুয়াশা,
হৃদপিণ্ডের ভেতর ক্রমে কঠিন হয়ে ওঠা,
রক্তের ঝলকানি।
সেখানে ব্যথা স্পন্দিত হয়,
উঠে আসে নিজেরই অস্তিত্বের খবর,
এর নাম বেঁচে থাকা,
শুধুই অক্সিজেন নয়, নিজের ব্যথা বেদনা বুঝে ওঠার ক্ষমতা।
কিন্তু মানুষ হওয়া আরেক স্তর,
যেখানে অপরের ব্যথা এসে
নিজের শিরায় শিরায় যেন নিঃশ্বাস ফেলে।
কোথাও কেউ ভেঙে পড়লে
তার অশ্রুর রং আমাদের মনে আঘাত করে,
অলক্ষ্যে, নিঃশব্দে, প্রতিবার।
মানুষ হওয়া মানে
দুঃখের ঠিকাদার হওয়া নয়,
বরং একটি জানলা খুলে রাখা,
যেখানে অন্যের কষ্ট বাতাসের মতো ঢুকে আসে,
বিবেকের ভেতর আলোড়িত করে
আমাদের অস্থির নীরবতা।
যে মুহূর্তে অন্যের ক্ষতের দিকে তাকিয়ে
নিজের প্রাণে শিরশিরানি হয়,,
সেই মুহূর্তেই জন্ম নেয়
মানুষ নামের গভীরতম উচ্চারণ।
বেঁচে থাকা ব্যক্তিগত,
মানুষ হয়ে ওঠা,
পুরো পৃথিবীর সাথে,
অদৃশ্য এক হৃদস্পন্দনের যোগসূত্র।

স্মৃতি নিয়ে বাঁচা
তপন কুমার দেবনাথ
কবে শেষ ভিজে ছিলাম আমরা
জ্যোৎস্নার আলোর বৃষ্টিতে,
কবে শেষ তোমার খোঁপায়
গুঁজে ছিলাম বর্ষার প্রথম কদম ফুল ---
এখন আর মনে থাকে না সব,
তোমার ছবি টাঙানো আমার
ঘরের দেয়ালে, মোটা ফ্রেমে!
আমার বিছানায় আজও
জানালা গলে জ্যোৎস্না এসে
পড়ে, যেখানে তোমার শূন্যতায়
এখন শুধুই বাতাস খেলা করে!
এক অখণ্ড নিরবতা আমার
চারদিকে পাঁচিল তুলে দাঁড়িয়ে
কতো মানুষ চারদিকে, কতো কোলাহল
আমার চারপাশে নিত্যদিন,
নিরবতার পাঁচিলের ওপারে আমি
শুধু একা,আধা আধা শব্দগুলো
নিস্তেজ হয়ে আসা মস্তিষ্কে
আঘাত করলেও, আমি ভুলে যাই
সব কিছু, শুধু বুকে জমা থাকে
তোমার স্মৃতিগুলো ভাঙ্গা কাঁচের মতোই!

নদী
সংবেদন চক্রবর্তী
বাবার মৃত্যুর পরে মায়ের আঁচলে জলনদী।
নদীজলে স্নান সেরে শাখা পলা ভেঙে সাদা শাড়ি।
ঠিক তারপর থেকে যতদিন মা বেঁচে ছিলেন
অশ্রুজল চুষে সাদা পাড়ে আঁকা ছিল জলনদী
আর সেই জল নদীতে আমরা পাঁচ ভাইবোন
নদীজল মনে করে ডুব দিয়ে উঠে আসতাম
আজ ভাবি কে মায়ের নাম নদী রেখে গিয়েছিল!
পাড়াপড়শিরা বলে মা তোদের নদীমাতৃক ছিলেন।
Copyright © 2025 আক্ষরিক - All Rights Reserved.
Powered by GoDaddy
We use cookies to analyze website traffic and optimize your website experience. By accepting our use of cookies, your data will be aggregated with all other user data.